আজ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
আর্র্ন্তজাতিক শান্তি দিবস। ১৯৮১ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভা ২১ সেপ্টেম্বর দিনটিকে
আর্ন্তজাতিক শান্তি দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। এর দুই দশক পর ২০০১ সালে জাতিসংঘের
সাধারণ সভায় বিশ্বেও রাষ্ট্রসমূহ এই দিনটিকে অহিংস ও যুদ্ধবিরতির দিন হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে
গ্রহণ করেছে এবং এই দিনটির প্রতি সম্মান রেখে সব ধরনের যুদ্ধবিগ্রহ থেকে বিরত থাকার
এবং শান্তি নিয়ে শিক্ষা ও জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য দিনটি পালন করতে সকল রাষ্ট্র, জাতি
ও জনগোষ্ঠীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
জাতিসংঘ এ বছরের আর্ন্তজাতিক শান্তি দিবসের
প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করেছে। এটি হলো “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা: শান্তি স্থাপনের
জন্য অন্যতম ভিত” [The
Sustainable Development Goals: Building Blocks for Peace.]
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে
আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের সর্বসম্মতিক্রমে ১৭টি টেকসই উন্নয়ন
লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ২০৩০ সালের এজেন্ডা হিসেবে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে এ সকল
লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্ঠা চালানোর জন্য রাষ্ট্রসমূহকে আহ্বান জানানো
হয়েছে। যার উদ্দেশ্য হলো দরিদ্রের পরিসমাপ্তি, ধরিত্রীকে রক্ষা এবং বিশ্বের মানব জাতির
জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। আমাদের সময়ের মধ্যে শান্তি নিশ্চিত করার জন্য টেকসই উন্নয়নের
লক্ষ্যমাত্রা একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কারণ উন্নয়ন ও শান্তি উভয়ই পরস্পরের পরিপূরক। এরা
একে অপরকে প্রভাবিত করে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, এই ১৭টি টেকসই উন্নয়ন
লক্ষ্যমাত্রা মানব সমাজের জন্য বিশ্ববাসীর যৌথ স্বপ্ন এবং এটা বিশ্ব নেতৃত্ব ও জনগণের
একটা চুক্তি।
‘টেকসই’ মানে হলো ভবিষ্যৎ
প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর সক্ষমতাকে অক্ষত রেখে বর্তমান মানব সমাজের মৌলিক চাহিদা পূরণ
করা। বর্তমানের ক্ষুধা, দারিদ্র, প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস, পানির অভাব, সামাজিক অসমতা,
পরিবেশ ধ্বংস, বর্ণবাদ ইত্যাদি সমস্যা শান্তির জন্য বড় ধরণের চেলেঞ্জ। এগুলো দ্বন্দ্বের
গভীরতাকে বাড়িয়ে দেয়। টেকসই উন্নয়ন দ্বন্দ্বের কারণগুলো নিরসনে সহায়তা করে। শান্তির
ভিত্তি তৈরী করে। অপরদিকে, শান্তিও টেকসই উন্নয়ন বেগবান করার অন্যতম শর্ত। তাছাড়া,
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ১৬ সরাসরি “শান্তি, ন্যায়বিচার এবং শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান”-এর উপর
গুরুত্ব দিয়েছে। তাছাড়া টেকসই উন্নয়ন অন্য ১৬টি লক্ষ্যও শান্তি অর্জনে প্রত্যক্ষ ও
পরোক্ষভাবে সহায়তা করে।
১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রত্যেকটিই বিশ্ব শান্তির জন্য অন্যতম
প্রধান ভিত। এগুলো অর্জনের জন্য আমাদের প্রত্যেককেই একযোগে কাজ করা দরকার। আমাদের ঐক্য
শান্তির সম্ভাবনাকে উন্মোচিত করে। আজ ২১ সেপ্টেম্বর দিনের ২৪টি ঘন্টা থেকেই একটা শান্তিপূর্ণ
ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ তৈরীর কাজ সূচনা হোক!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন